আজ বৃহস্পতিবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এখনো জনপ্রিয় জনি লিভার ‘বালাই ষাট’

কখনো কখনো তাঁর অভিনয়কে অনেকের কাছে ভাঁড়ামি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এটা স্বীকার করতেই হবে, নব্বইয়ের পর থেকে একটা দীর্ঘ সময় বলিউডে কৌতুকের স্থানটি একা হাতে ধরে রেখেছিলেন জনি লিভার। কমেডিয়ানদের ভিড়ে জনি একটু ‘অন্য রকম’। আজ এই ১৪ আগস্ট, এ তারকার জন্মদিন। ১৯৫৭ সালের ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে জন্ম নেওয়া এ শিল্পী আজ ৬০ বছরে পড়লেন।

হিন্দি সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় কমেডিয়ান জন প্রকাশ রাও জানুমালা ওরফে জনি লিভার ১৯৮৪ সালে অভিনয়জীবন শুরু করেন। অভিনয় করেছেন তিন শতাধিক ছবিতে। তাঁর কৌতুকাভিনেতা হওয়ার প্রধান অনুপ্রেরণা জনি ওয়াকার, মেহমুদ, কিশোর কুমার।

২০১৪ সালে ২৪ জুলাই টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জনি লিভার নিজেই জানিয়েছেন, অর্থের অভাবে সপ্তম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। বাবা হিন্দুস্থান লিভারে অপারেটরের কাজ করতেন। সেখানেই সমস্ত কর্মকর্তার নকল করে দেখাতেন জনি। সেই থেকেই জনি রাও হয়ে ওঠেন জনি লিভার। বাড়ির বড় ছেলে, তাই সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল তাঁকে। রোজগারের সন্ধানে কলম বিক্রি করতেন মুম্বাইয়ের রাস্তায়। অভিনব ছিল তাঁর বিক্রির পদ্ধতি। বলিউড তারকাদের নকল করে বেচতেন একটার পর একটা কলম। হিন্দুস্তান লিভার কারখানায় কাজ করার সময় তাঁর কৌতুকাভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে সহকর্মীরা নাম দেন ‘জনি লিভার’।

১৯৮০ সালে তাঁর প্রথম প্রকাশিত কমেডি অ্যালবাম ‘হাসি কে হাঙ্গামে’ ভারতে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সুনীল দত্তের ‘দর্দ কা রিস্তা’ ছবিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন। সাফল্য আসে ‘বাজিগর’ ছবির মধ্য দিয়ে।

ওই সাক্ষাৎকারে জনি লিভার আরও জানান, শরীরচর্চা তাঁর একদম অপছন্দ। তবে রোজ সকালে উঠে নিয়ম করে শব্দজট-ধাঁধার সমাধান করা অভ্যাস আছে তাঁর। ভোজনরসিক। কিন্তু এখনো স্টেজ শোয়ের দুদিন আগে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন।

যখন মঞ্চে লোক হাসাতেন জনিসময় নিয়ে ভীষণ খুঁতখুঁতে জনি। কোথাও যাওয়ার থাকলে তিন ঘণ্টা আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দেন। শুটিংয়ে আজও ঘণ্টা খানেক আগেই পৌঁছান। কারণ, অভিনয় তাঁর কাছে আজও ‘সিরিয়াস বিজনেস’।

মেধাবী এই কৌতুকাভিনেতা এখন খুব বেছে কাজ করেন। নিয়মিত করেন স্টেজ শো। আর এসব মঞ্চ পরিবেশনায় জনির সঙ্গী হন মেয়ে জেমি লিভার। বাবার মতো জেমিও দারুণ মেধাবী। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনস্টার থেকে মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরধারী জেমি বাবার মতো কৌতুককেই নিজের পরিচয় আর পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

অর্থের অভাবে সপ্তম শ্রেণিতে পাঠ চুকানো জনি লিভার এখন নিজের মার্সিডিজ চালান। এটি তাঁর বড় পছন্দের গাড়ি। জীবনের অনেক চড়াই-উতরাই শেষে মার্সিডিজের আসনে এখন তিনি সাবলীল।

সর্বশেষ সংবাদ